HNExpress ওয়েব ডেস্ক : মেলবোর্নের ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সাথে যৌথ উদ্যোগে, লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি আজ ভারতের একজন মহিলা গবেষকের জন্য একটি নতুন ও তাৎপর্যপূর্ণ জীবন পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিয়েছে।
লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি শাহরুখ খানের নামাঙ্কিত এই পিএইচডি স্কলারশিপ 2020 সালে ভারতীয় ছাত্র গোপিকা কোত্তানথারাইল ভাসিকে প্রদান করে যিনি অবশেষে 2022 সালের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে সেটি সম্পন্ন করার সুযোগ পেলেন। গোপিকার গবেষণার মূল বিষয়বস্তু হলো ক্রম হ্রাসমান মৌমাছির স্ংখ্যা তথা ক্রমহ্রাসমান উদ্ভিদ বৈচিত্র্য। লা ট্রোব ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর, মিঃ জন ব্রম্বি বলেছেন যে ” শাহরুখ খান একজন যোগ্য গবেষককে তার নামাঙ্কিত স্কলারশিপ অনুমোদন করেছেন বলে আমরা অভিভূত “। তিনি আরো বলেন যে” গোপিকা ইতিমধ্যেই কৃষি বিজ্ঞানে লা ট্রোবের বিশ্ব-মানের গবেষণায় মূল্যবান অবদান রাখছে – বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিরাট কর্মপরিকল্পনা আছে যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলায় সহায়তা করা” । শাহরুখ খানের জনহিতকর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে মিঃ ব্রাম্বি বলেন ” পরিবেশগত স্থায়িত্ব, স্বাস্থ্য বা কৃষির মতো গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান খুঁজে পেতে গোপিকা কে এই স্কলারশিপ দেওয়া। এর জন্য আমরা গর্বিত। তিনি আরো বলেন যে ” লা ট্রব ইউনিভার্সিটি শাহরুখ খানের মীর ফাউন্ডেশনের সকল হিতৈষী মূলক কাজে কে স্বীকৃতি দেয় যা মহিলাদের ক্ষমতায়ন কে তুলে ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই স্কলারশিপের অন্তর্ভুক্তি, ব্যক্তি সমতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল্যবোধকেও প্রতিফলিত করে।”
উক্ত অনুষ্টানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গোপিকা বলেন যে, ” মহামারীজনিত কারণে দীর্ঘ দুই বছর অপেক্ষা করার পর যখন আমি অবশেষে মেলবোর্নে পৌঁছে ছিলাম তখন এটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত। তিনি আরো বলেন “আমি এই দেশটিকে ভালোবাসি – বিশেষ করে এখানকার মানুষ, যারা সবাই খুব উষ্ণ এবং সকলকে স্বাগত জানায়। আমার সহকর্মী, সুপারভাইজার এবং বন্ধুরা খুব সহায়ক এবং আমার প্রতি যত্নশীল। তিনি অন্যান্য ভারতীয় মহিলাদের উৎসাহিত করতে গিয়ে আরো বলেন যে ” আপনারা কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে এই সুন্দর পৃথিবীকে অন্বেষণ করুন, এবং আপনি এই চমৎকার সুযোগটি নিয়ে আপনার আগামী দিনকে সমৃদ্ধ করুন।”
এখানে উল্লেখ্য যে আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথীকে তার আবেদন পত্র জমা দিতে হবে। স্কলারশিপ পাওয়ার অন্যান্য যোগ্যতা গুলি হলো প্রার্থী একজন মহিলা ভারতীয় নাগরিক হবেন যিনি ভারতে থাকেন এবং গত 10 বছরের মধ্যে গবেষণা ডিগ্রি (বা সমতুল্য) দ্বারা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। প্রার্থীকে গবেষণা সম্পন্ন করার জন্য $225,000 (AUD) এর বেশি মূল্যের চার বছরের গবেষণা বৃত্তি দিয়ে সমর্থন করা হবে। তারা ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করবে লা ট্রোবের অগ্রাধিকার পাওয়া গবেষণা থিমগুলির সাথে যুক্ত হতে হবে এবং যা জাতিসংঘের উন্নয়নমূলক লক্ষ্যগুলির সাথে যুক্ত।
লা ট্রোব হল প্রথম অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় যা 2019 সালে শাহরুখ খানকে সম্মানসূচক ডিগ্রী, ডক্টর অফ লেটার্স দিয়ে ভূষিত করেছিল, তার মানবিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ, যার মধ্যে মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য মীর ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা সহ ভারতে মহিলাদের ওপর অ্যাসিড হামলা অন্যতম।
এখানে প্রাসঙ্গিক যে স্কলারশিপ হোল্ডার রা নিম্নলিখিত সূযোগ গুলি পাবে চার বছরের লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি ফুল-ফি রিসার্চ স্কলারশিপ ব্যয় নির্বাহ করার জন্য প্রতি বছর $32,500 (AUD) মূল্যের সাড়ে তিন বছরের জন্য একটি লা ট্রোব গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপ।
ভিসার মেয়াদ সহ একজন একক প্রার্থীর জন্য মেডিব্যাঙ্কের সাথে ওভারসিজ স্টুডেন্ট হেলথ কভার। লা ট্রোবের বিশ্বমানের গবেষণা সুবিধা, পেশাদার উন্নয়ন কর্মসূচির স্যুট এবং পুরস্কার বিজয়ী গবেষকদের তত্ত্বাবধানে অ্যাক্সেস পাওয়া এছাড়াও একক ব্যক্তির জন্য ভিসা আবেদনের খরচ তথা ভারত থেকে মেলবোর্নে ভ্রমণ খরচ কভার করতে $3,000 AUD ভ্রমণ ভাতা। আগ্রহী প্রার্থীদের অবশ্যই শাহরুখ খান লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি পিএইচডি স্কলারশিপের জন্য শুক্রবার 23 সেপ্টেম্বর 2022 এর মধ্যে একটি অনলাইন এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট জমা দিতে হবে। স্কলারশিপের যোগ্যতার মানদণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের জন্য, নিন্মে দেওয়া ওয়েবসাইট টি দেখুন www.latrobe.edu.au/srk-scholarship।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে লা ট্রব ইউনিভার্সিটি টাইমস হায়ার এডুকেশন, 2021 সার্ভে অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ এক শতাংশের মধ্যে স্থান পেয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশের যে বিশিষ্টজনেরা হোস্ট করেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, কপিল দেব, মালাইকা অরোরা খান, অমিতাভ বচ্চন, রাজকুমার হিরানি এবং অভিজাত জোশী প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। 2005 সালে, নির্মিত বুন্দুরার লা ট্রোবের মেলবোর্ন ক্যাম্পাসটি সম্পূর্ণরূপে অস্ট্রেলিয়ায় নির্মিত প্রথম বড় চলচ্চিত্র যেটি বলিউডে সাফল্যের সাথে প্রদর্শিত হয়েছিল। এখানের শুটিং করা সালাম নমস্তে, ছবিটি বক্স অফিসে $10 মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি সংগ্রহ করেছিল।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৯০০০ ভারতীয় ও চীনা ছাত্র বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সর্বোপরি এখানকার অসামান্য লাইব্রেরি ও তার কালেকশন যেখানে 38,000 টিরও বেশি ভলিউমের মনোগ্রাফ, জার্নাল, ম্যাগাজিন এবং সরকারী প্রকাশনা রয়েছে যা অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম।