HNExpress নিজস্ব প্রতিনিধি : ভারতের অন্যতম বৃহত স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে একটি মণিপাল হাসপাতাল স্ট্রোকসচেতনতা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা আরো ভালোভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে ‘স্ট্রোক স্মার্ট কলকাতা’ প্রচার শুরু করে একাধিকপ্রচেষ্টাকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এই অনুষ্ঠানটি বিশ্ব স্ট্রোক দিবস, যা প্রতি বছর ২৯শে অক্টোবর বিশ্বব্যাপীউদযাপনকে করা হয়, যেখানে মণিপাল হাসপাতালের ইউনিটগুলির শীর্ষস্থানীয় নিউরোলজিস্ট এবং নিউরোসার্জনরা কীভাবেস্ট্রোকের প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং পরিচালনার ফলে রোগীর ফলাফল উন্নত হতে পারে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েআলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে মণিপাল হাসপাতালের বিশিষ্ট স্ট্রোক বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছেন মণিপাল হাসপাতাল ঢাকুরিয়ারনিউরোসার্জন প্রফঃ ডাঃ রবীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য, ডাঃ লক্ষীনারায়ণ ত্রিপাঠী, বিশেষজ্ঞ নিউরোসার্জেন মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল,(এখন মণিপাল হাসপাতালের অন্তর্ভুক্ত),ডাঃ অপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়, ইন্টারভেনশনালনিউরোলজিস্ট ও স্ট্রোক বিশেষজ্ঞ, মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুর, ডাঃ নির্মাল্য রায়, নিউরো ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিস্ট, মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল,(এখন মণিপাল হাসপাতালের অন্তর্ভুক্ত), ডাঃ দীপেন্দ্র কুমার প্রধান, সিনিয়রকনসালট্যান্ট- নিউরোসার্জারি, মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুর এবং ডাঃ অয়নভদেব গুপ্ত, আঞ্চলিক সিওও, মণিপালহাসপাতাল (পূর্ব)। এই বিশেষজ্ঞরা স্ট্রোকের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করেন যার একটি উল্লেখযোগ্য শতাংশ কমবয়সীদের মধ্যে ঘটে এবং স্ট্রোকের সূত্রপাত কীভাবে সনাক্ত করা যায় ও অবিলম্বে চিকিৎসা করানোর বিষয়ে আরোজনসচেতনতার প্রয়োজনের কথা বলেন।
‘বি স্ট্রোক স্মার্ট’ প্রচারাভিযানে কলকাতা জুড়ে, বিশেষত আবাসিক কমপ্লেক্স এবং বয়স্কদের মধ্যে রাথমিক স্ট্রোক শনাক্তকরণদক্ষতা ও স্বমূল্যায়ন এবং লক্ষণগুলি সনাক্ত করার ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য কর্মসূচি
রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটিশহরব্যাপী সচেতনতা অভিযান, যাতে অ্যাম্বুলেন্স চালক, যারা প্রথমে রোগীর কাছে পৌঁছতে পারেন, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারকর্মসূচী চালু করা হয়েছে। এই সমস্ত হাসপাতালগুলি নিউরোসার্জারি আইটিইউ, এইচডিইউ এবং দিনে রাতে যেকোনো সময়নিউরোলজি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পাওয়াও স্ট্রোক রোগীদের দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা যাতে নিশ্চিত করাযায় যে এই রোগীরা প্রথম থেকেই বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা পেতে পারেন।
কলকাতার মণিপাল হাসপাতালগুলিকে স্ট্রোকের জন্য প্রস্তুত করার পাশাপাশি, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের স্ট্রোকের সম্ভাব্য লক্ষণগুলিসনাক্ত করার জন্য “বি স্ট্রোক স্মার্ট” প্রচারাভিযানটি নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, অ্যাম্বুলেন্স চালকরোগীদের প্রথম যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু; এইভাবে, চালকদের স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সনাক্ত করার জন্য দক্ষতা প্রদান করাহয় এবং অবিলম্বে নিশ্চিত করা হয় যে রোগীকে নিকটতম স্ট্রোক প্রস্তুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মণিপাল হাসপাতালইতিমধ্যেই কলকাতা জুড়ে স্ট্রোক সচেতনতার যথাযথ অনুশীলনের বিষয়ে সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করতে এবং এটিকে ‘স্ট্রোক স্মার্ট’ শহরে পরিণত করার জন্য জীবন রক্ষাকারী দক্ষতার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়িত করার জন্য প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছে।
স্ট্রোকের প্রাথমিক ঝুঁকির কারণগুলি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং জরুরি অবস্থায় নেওয়া মৌলিক পদক্ষেপগুলি সম্পর্কেসচেতনতা তৈরির উপর জোর দেওয়া হয়। ডঃ অয়নভ দেবগুপ্ত, মণিপাল হাসপাতালের (পূর্ব) আঞ্চলিক সিওও স্ট্রোক প্রতিরোধেসচেতনতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেন, “মণিপাল হাসপাতালে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলাযেখানে স্ট্রোক প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ ও তাতৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। ‘বি স্ট্রোক স্মার্ট “প্রচারাভিযানের মাধ্যমে, আমরা পূর্ব ভারতে স্ট্রোক -প্রস্তুত আবহ তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছি, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সনাক্ত করতেএবং দেরি না করে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সচেতনতা তৈরী করতে চাই। প্রতিটি রোগীর জন্য দ্রুত, জীবন রক্ষাকারীপ্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে কলকাতা এবং বৃহত্তর অঞ্চলটিকে উন্নত পরিকাঠামো, বিশেষজ্ঞ টীম ও বিশেষ স্ট্রোক-প্রস্তুত অ্যাম্বুলেন্সের একটি নেটওয়ার্ক দিয়ে সজ্জিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ডাঃ লক্ষীনারায়ণ ত্রিপাঠী, মেডিকা ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিক্যাল ডিজিজেস (এমআইএনডি) (বর্তমানে মণিপালহাসপাতালের একটি অংশ) এর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, ডিরেক্টর ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট বলেন, “জীবনযাত্রার কারণ, চাপ এবং অলক্ষিত সতর্কতার লক্ষণগুলির কারণে তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঘটনা বাড়ছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছিযে আজকাল প্রায় ১০-১৫ শতাংশ স্ট্রোক ১৮-৫০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে ঘটে। এই উদ্যোগটির মাধ্যমে আমরা কলকাতায়স্ট্রোকের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য এবং ওষুধের পরিবর্তে প্রতিরোধের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চাই। যেহেতু এই ধরনের ঝুঁকি এবংপ্রতিরোধের ব্যবস্থা সম্পর্কে আরো সচেতনতা শহরবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে স্ট্রোকের ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব কার যায়।”
মণিপাল হাসপাতাল কলকাতা জুড়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে, জীবন রক্ষাকারী দক্ষতা প্রদান এবং কলকাতাকে ‘স্ট্রোক স্মার্ট’ শহরে পরিণত করার জন্য প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছে। লক্ষ্য হল প্রধান স্ট্রোকের ঝুঁকি, প্রতিরোধ এবং মৌলিক জরুরিপদক্ষেপগুলি সম্পর্কে শিক্ষিত করা “। মুকুন্দপুরের মণিপাল হাসপাতালের নিউরোসার্জেন ডাঃ দীপেন্দ্র কুমার প্রধান বলেন, “স্ট্রোক সচেতনতা হল প্রাথমিক চিকিৎসার উপায়, এবং সমস্ত রোগীই জানেন না যে প্রথম ঘন্টাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগমানুষকে নিরাপদে নির্ণয় এবং স্ট্রোকের জন্য চিকিৎসা করা মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যাপার। ‘বি স্ট্রোক স্মার্ট’ প্রচারাভিযানটি রোগীদেরপাশাপাশি সাধারণ মানষকে স্ট্রোকের লক্ষণগুলি তার প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করার বিষয়ে সচেতন করার উদ্দেশ্যে আমরা এইকর্মসূচী নিয়েছি।”
এই মূহুর্তে স্ট্রোক ভারতে মৃত্যুর অন্যতম একটু কারণ যাতে মৃত্যুর ঘটনা ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।যেহেতু স্ট্রোক জনসংখ্যার একটি উচ্চ শতাংশকে প্রভাবিত করে, বিশেষত ২৫-৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে, “বি স্ট্রোক স্মার্ট” প্রচারটিজনসাধারণের শিক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ এবং স্ট্রোক প্রতিরোধ ও পরিচালনার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপের দিকেনিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। এই সচেতনতা কর্মসূচির লক্ষ্য হল কলকাতা ও তার বাইরে মণিপাল হাসপাতালের স্ট্রোক সেবার পুরোআবহর উন্নতির পথ সুগম করা।